সিঁড়ি

Bangla Love Story, Bangla Stories, Bangla Romantic Story, ভালবাসার গল্প, Fiction, Golpo, Story, Love, Ghost Story, Inspiration, Book Review, Boi Poka, Romance , Boi, Poka, Science, Poetry, History, Comics, Bangla PDF & Bangla Story, bangla love story - Real worlds, কৌতুক, টিপস, বিনোদন, Free bangla ebook, বাংলা গল্প, bangla story, download bengali ebook, story in bengali, golpo, bengali story, bangla golpo, golpo bd, bangla story, story, green, vivacity, green vivacity, নতুন গল্প, bd story teller, bd storytime, ছোটগল্প - short story, প্রেমকহিনী - Love story, রহস্যগল্প - Story of mystery, ভৌতিক গল্প - Scary story, সামাজিক গল্প - Social stories, কাব্য - Poetry, হাস্যকৌতুক - Funny, শিশু সাহিত্য - Children's Literature, ভ্রমণকাহিনী - Travel stories
সিঁড়ি - Green Vivacity


                             এক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে পল্লবী। মেধার মানও সাধারণ। কিন্তু অক্লান্ত অধ্যবসায় ও কঠোর পরিশ্রমের জোরে পড়াশোনার ক্ষেত্রে সাফল্যের সিঁড়িগুলো সে অনায়াসেই পার হয়ে যায়।বাবা সরকারী অফিসে স্বল্পবেতনের চাকরী করতেন। কিন্তু একমাত্র সন্তান পল্লবীর সমস্ত চাহিদা যথাসাধ্য পূর্ণ করে গেছেন। পল্লবীও অবশ্য তার যথাযথ মর্য্যাদা দিতে পিছপা হয় নি। ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ সিঁড়িও বিনা হোঁচট খেয়ে পার হয়ে গেল। বাবাও রিটায়ার করলেন চাকরী থেকে। সামান্য পেনশনের টাকায় কোনরকমে টেনেহিঁচড়ে সংসার চলতে লাগলো। পল্লবী চাকরীর খোঁজে হন্যে হয়ে উঠলো। তার আকাঙ্ক্ষা আকাশ ছুঁতে চায়। মধ্যবর্তী সিঁড়ির ধাপে আজ সে দাঁড়িয়ে। সে একটা স্বপ্ন প্রায় দেখে "বন-জঙ্গল, পাহাড়-পর্বত, নদী-নালা সবকিছু সে অনায়াসে পেরিয়ে এক বিরাট খোলা মাঠে এসে পৌঁছেছে। 

খোলা মাঠের মাঝখানে এক সিঁড়ি আকাশের দিকে উঠে গেছে, কিন্তু তার শেষ দেখা যাচ্ছে না। সে তাড়াতাড়ি গিয়ে সেই সিঁড়িতে চড়তে থাকে আকাশ ছোবে বলে। সিঁড়ি চড়তে থাকে, চড়তেই থাকে, শেষ আর হয় না" ঠিক তখনই ঘুম ভেঙ্গে যায়। এই স্বপ্নটা সে বেশ কয়েকবার দেখেছে, কিন্তু শেষটুকু কখনোই দেখতে পায় নি। গতকাল আবার সেই স্বপ্নটা তার ঘুমের মধ্যে হানা দিল। এবার সে তাড়াতাড়ি সিঁড়ি চড়তে লাগলো। খানিক উঁচুতে উঠে দেখে সিঁড়ির দু'দিকে গাঢ় অন্ধকারে আচ্ছন্ন খাই। আর সামনে আলোর ইশারা।

সে প্রায় দৌড়ে আলোর কাছে পৌঁছাতে গেল আর অন্ধকার খাই এ পড়ে গেল ! ব্যস ঘুমও ভেঙ্গে গেল। ঘুম ভেঙ্গে দেখে সকাল হয়ে গেছে। মনটা স্বপ্নের কথা ভেবে বিষন্ন হয়ে উঠলো। জোর করে বিছানা ছেড়ে উঠে ফ্রেস হয়ে বসতেই মা চায়ের কাপ হাতে হাজির হলেন, " কি হয়েছে রে, শরীর খারাপ ? মুখ শুকনো লাগছে।" "না মা, কিছুই হয় নি" পল্লবী মায়ের হাত থেকে চায়ের কাপ নিয়ে মুখে প্রসন্ন ভাব আনার চেষ্টা করলো। মা চা দিয়ে চলে গেলেন। এমন সময় ফোনটা বেজে উঠলো। 

এক জায়গা থেকে ইন্টারভিউ কল এসেছে। ১১:০০ টার মধ্যে সেখানে পৌঁছাতে হবে। "মা, তাড়াতাড়ি রান্নাটা সেরে ফেলো। ১০:০০টার মধ্যে খেয়ে নিয়ে বেরোবো।" মাকে সব কথা বলে তাড়া দিয়ে নিজেও স্নানে ঢুকে পড়লো। ১০:০০ টার মধ্যে তৈরী হয়ে বেরিয়ে পড়লো গন্তব্যে। সেখানে পৌঁছে দেখে ১৪/১৫ জন সুবেশা, সুসজ্জিতা আগের থেকেই অপেক্ষা করছে। একের পর এক ডাক পড়ছে আর ১৫ মিনিটের মধ্যে বেরিয়ে আসছে এবং কেউ কারও সাথে কোনরকম কথা না বলেই চলে যাচ্ছে। এবার পল্লবীর ডাক পড়লো। 

ভেতরে ঢুকে দেখে একজন মধ্যবয়সী স্যুটেড বুটেড ভদ্রলোক টেবিলের ওপাশের চেয়ার দখল করে বসে আছেন। ঘরে আর কেউ নেই। তিনি পল্লবীর আপাদমস্তক জরিপ করে বসতে বললেন। প্রশ্ন করলেন, "আপনি কি ইমিডিয়েট চাকরীতে জয়েন করতে চান ?" পল্লবীর মাথায় বাড়ীর আর্থিক পরিস্থিতি একঝলক উঁকি দিয়ে গেল। সে আর কিছু না ভেবেই ব্যগ্র হয়ে বলে উঠলো, " নিশ্চয় স্যর।" "তাহলে কোম্পানীর এক গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্য আপনাকে গ্রহণ করা হলো।" মাইনের অংক শুনে পল্লবীর মন আকাশে ডানা মেলে উড়তে লাগলো।

"আজ সন্ধ্যে ৭:০০ টার সময় হোটেল 'এলিট' এ রুম নং ৫ এ উপস্থিত হবেন। সেখানে আমাদের স্পেশ্যাল মিটিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছে।" শুনে চমকে উঠলো পল্লবী। কিন্তু না করতে পারলো না। এক স্বপ্নের দুনিয়ায় ভাসতে লাগলো যেন সিঁড়ির ওপরের আলোটাকে প্রায় ছুঁয়েই ফেলেছে সে। বাড়ীতে সব কথা শুনে মা-বাবার মন ঠিক সায় দিয়ে উঠতে পারলো না।বিনা অভিজ্ঞতায় শুরুতেই এত মোটা অংকের মাইনে ! পল্লবী কোন কথায় কান না দিয়ে ঠিক সন্ধ্যে ৭:০০ টায় নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে গেল। কত নং রুম যেন, হ্যাঁ রুম নং ৫। ডোরবেল বাজাতেই দরজা খুলে গেল। কোন আলো নেই রুমে ! নিশ্ছিদ্র অন্ধকার। পা পিছলালো পল্লবীর। গাঢ় অন্ধকার তাকে গ্রাস করে নিল। সিঁড়ির ওপরে দেখা আলোকে আর তার ছোঁয়া হলো না।

                                                            ........সমাপ্ত

"সিঁড়ি" গল্পটি পড়ে আপনার কেমন লেগেছে তা কিন্তু আমাকে জানাতে ভুলবেন না। আপনি আরো গল্প পড়তে আমাকে অনুসরণ করতে পারেন। গল্পটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।


মেহেদী হাসান পিয়াস

                                                                             ©

No comments

Powered by Blogger.