প্রেমিকা বনাম স্ত্রী
![]() |
প্রেমিকা বনাম স্ত্রী - Green Vivacity |
আহাঃ প্রেমিকা নামটা শুনলেই কেন জানি মনটা খুশীতে ভরে যায়, কেমন যেন একটা আলাদা অনুভুতি। অপূর্ব সেই অনুভুতি। আপনাদের সকলের হয়ত সেই অনুভুতি আছে, তাও আমি কিছুটা শেয়ার করছি। কেমন যেন একটা প্রেমে পরলে হয় একা থাকলেও ভালো লাগে না, অনেকের মাঝে থাকলেও ভালো লাগে না। ওর কথা কাউকে না বলেও থাকা যায় না, আবার কাউকে বললেও খারাপ লাগে। ওর জন্য সবসময় মনটা কেমন যেন গামছা নিংড়ানোর মতো মোচড় দেয়।
স্ত্রীর কথা মনে পরলেই, মনে হয় যেন এই যাঃ কি যে ভুল করেছি। কি যে নিতে বাকি থেকেছে। এমনকি রাতে ঘুমোতে যাওয়ার সময়ও, হয়ত বা প্রেম এসেছে বা আসবে, চলে যেতে পারে শুধু এই ধরনের কথা শুনে, গেটে তালা দিয়েছ, মোবাইল গুলো সব চার্জে দিয়েছ, তোমার ওষুধটা খেয়েছ।
এ কথা গুলো আপনাদের সকলের কথা নাও হতে পারে, কিন্তু শুনুন আমি কথা দিচ্ছি একটা ভালো কারনের দিকে আপনাদের নিয়ে যাচ্ছি, আমাদের এই যাত্রা অবশ্যই ভালো লাগা ও মধুর হবে।
আচ্ছা এই রকম কেন হয়? আপানারা কখনো ভেবেছেন কি, যে ছিল আমার স্বপ্ন চারিণী, প্রতিনিয়ত যার কথা ভেবেই আমার দিন রাত পার হত, যার প্রতিটা কাজ কথা ভালো লাগতো, বিয়ে হওয়ার কিছুদিন পরেই কেন সেই যেন বিরক্তির কারন হয়ে দারায়, কথা প্রসঙ্গে বার বার কেন ধ্বনিত হয়, তোমার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়ে, জীবনটাই মাটি হয়ে গেল। কেন ভুলে যাই, ‘পাগলী তোর সঙ্গে ঘর বাধব, কাটাব সারা জীবন”।
অনেক দিন এই সংসার জীবনে এই ব্যাপার গুলো নিয়ে একটা ধারণা হয়েছে, সেটা শুধু আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করছি, আমি জানি এই কথা গুলো আপনারা সকলেই জানেন, আমি একবার শুধু মত বিনিময় করে নেওয়ার চেষ্টা করছি। যা আমার আগামী দাম্পত্যে কাজে লাগবে।
প্রেম বা প্রেমকার প্রাথমিক শর্ত হল, নিঃশর্ত ভালোবাসা বা Unconditional love । ওপর দিকে বিবাহের মূল সূত্রই হল শর্ত ভিত্তিক ভালোবাসা বা conditional love যা দিয়ে যাত্রা শুরু হয়, সেটা যদি আমরা নিঃশর্ত বা Unconditional পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারি তাহলে, নিশ্চয়ই আমাদের বিবাহ মধুর হয় ও স্বর্গের অনুভুতি সম্পন্ন ভালোবাসা সঙ্গসারে নেমে আসে।
There are so many same situations you can find in between your friendship relation and your partnership relation with lover and spouse (married).
ওহ এই একটা জ্বালা কিছুদিন হল ব্রাজিল পাটায়ার মেয়েদের সঙ্গে প্রেম করে করে তো ইংরেজিই শুধু চলে আসে, মোনিকা তো আমাকে পর্তুগীজ শিখিয়েই ছেড়েছে।
একদিকে বন্ধু বা প্রেমিকা অন্য দিকে স্ত্রী বা পার্টনার একই রকম, ব্যপার। আমাদের কলেজে আমার কয়েকজন বন্ধু, তার মধ্যে বিশেষ করে সুনীল আগরওয়াল ও রাজা খুব মনে পরছে এই ‘গল্প’ টা লেখার সময়। সুনীল রাজা দু জনেই গাড়িতেই কলেজ যেত, আমরা তাদের গাড়িতে সহযাত্রী হতাম। শুধু তো কলেজ যাওয়া তো নয়। কলেজে ঢুকেই এক চোট চা-আলু চাট খাওয়া তারপর এক প্রিওড করার পর গরম গরম সিঙ্গারা পরে বিকালে প্রায় দিন বিয়ার উইথ লাঞ্চ। এই কথা গুলো বলার একটাই কারন, বিল দেওয়ার সময় একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যেত। কে দিতে পারে। আমার মনে আছে আমাদের ব্যাচের সবাইকেই সুনীল একবার বৈশ্ন দেবী নিয়ে গিয়েছিল।
সেই সুনীল এখন সারাদিন আগ্রওয়াল হার্ডওয়ারে বসে থাকে, আমি কোন ইভেন্টের প্রপোজাল নিয়ে গেলে প্রথমেই বলে, ফায়দা কিতনা হ্যা ইয়ার’ রেস্টুরেন্টের বিলের ব্যপারেও বলে, তু আপনা Company কা একাউন্ট মে ডাল দে, প্রোপজাল তো তেরা থা না’।
কথা হচ্ছে এটাই লাভ কি? একটা সময় অতিবাহিত হওয়ার পর আমরা সম্পর্ক গুলোর মধ্যে লাভ খুজি, তখনই শুধু বিবাদ আর বিবাদ।
আমি অনেক স্বামী-স্ত্রী কে দেখেছি রাতদিন একে ওপরকে বোঝাতে থাকে, দেখো তোমার মার সামনে এই কথাটা, এই ভাবে বলা ঠিক হয় নি। তুমি এ মাসেও এই কাজটা দেরী করলে, কেন আমাকে সব সময় তোমার পেছন পেছন থাকতে হবে। আমার নিজের কিছু নেই, সব সময় শুধু তমাদের পেছনেই আমি শেষ হয়ে গেলাম।
বিয়ের আগে আমার সব কিছু আমার প্রেমিকার ভালো লাগতো। বিয়ের পর সব খারাপ। বিয়ের আগে যেই হাঁসিটা ছিল স্মার্ট বিয়ের পর সেটাই হল ক্যাবলা।
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধুরতা মাপার, খুব ভালো একটা দৃষ্টি ভঙ্গি বলছি। আমাদের সম্পর্ক গুলোর মধ্যে যদি অন্য কোন তৃতীয় জনের চিন্তা আসে তাহলেই দাম্পত্য সুখ বিঘ্নিত হয়। সেটা বাস্তবে হোক বা মনে মনে, দুটোই আমাদের দাম্পত্য সুখকে সমান ভাবে প্রভাবিত করবে। একটা সময় অব্দি আমার নিজেদের সঙ্গী ছাড়া কারও কথা ভাবি না। তার পর ধীরে ধীরে বিভিন্ন চরিত্র গুলো আমাদের মানসে উঁকি দেয়। অশান্তির কারন সেখান থেকেই শুরু হয়।
আমরা আমদের সম্পর্ক গুলোকে এজ ইট ইজ ভাবে নিতে পারছি কি না এটাও একটা বড় কারন। আমি যদি আমার স্ত্রীকে যেমন আছে তেমনি আমার প্রিয়, একথা ভাবতে না পারি তাহলে হেভেনলি লাভ আমি পাব না।
কিন্তু আমাদের চরিত্র হল আমারা প্রতিনিয়ত আমাদের সঙ্গীকে আমাদের চিন্তা-ভাবনার মত করতে চাই, বোঝাতে চাই এটাই ভুল করি।
আমরা আমাদের সম্পর্ক গুলোকে যেরকম আছে সেরকম ভাবেই যদি গ্রহণ করতে পারি তাহলে, একদিন সুখ শান্তি ঐশ্বর্য আমাদের চিন্তা ভাবনায় ও সংসারে নেমে আসবে।
তা নয়তো একে ওপরকে বদলাতে বদলাতে , এক দিন বলব তুমি কেমন যেন বদলে গেছ, আগের মতো আর নেই।
● "প্রেমিকা বনাম স্ত্রী" গল্পটি পড়ে আপনার কেমন লেগেছে তা কিন্তু আমাকে জানাতে ভুলবেন না । আপনি আরো গল্প পড়তে আমাকে অনুসরণ করতে পারেন। গল্পটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।
মেহেদী হাসান পিয়াস
No comments